Skip to main content

অভিনয়.......!!


.........


তখন ক্লাস নাইনে পড়ি।হঠাৎ পারিবারিক একটা সমস্যার
কারণে আগের স্কুলটা ছাড়তে হলো।
তবে তার সাথে সাথে পড়ালেখার জীবন থেকে
ও হারিয়ে গেলো একটা বছর।
কারন পুরাতন স্কুল থেকে আমাকে ছাড়পএ দিতে
চায়নি। আমি বরাবর ই খুব মেধাবী ছাএ ছিলাম।এইদিকে
নাইনের ও রেজিস্টেশন হয়ে গেছে।
কিন্তু আমাকে ও যে নতুন স্কুলে যেতেই হবে।
তাই বাধ্য হয়েই একটা বছর পিছনে পড়লাম।
নতুন স্কুলে ভর্তি হলাম।নতুন পরিবেশ, সব কিছুই নতুন।
নতুন নতুন মুখ।কাউকেই তেমন চিনি না।
সেজন্য স্বভাবতই একটু একা একা থাকতে হয়।
৩-৪ দিন খুব একা একা কাটালাম।
কিন্তু একা একা কি আর ভালো লাগে?
তাই ইচ্ছে করেই কয়েকটা ছেলের সাথে একটু
একটু কথা বলি।
কিন্তু কোন মেয়ের সাথে এখনও কথা বলিনা।
কারণ এমনিতেই মেয়েদের প্রতি এলার্জি এর
মধ্যে মেয়েদের সাথে কথা বলে,সম্পর্ক
গড়লে স্কুলের হেড স্যার ভাববে হয়তো আমার
এমন স্বভাব বলেই,আগের স্কুল থেকে আমাকে
বের করে দিয়েছে।যেহেতু আগের স্কুলটা খুব
স্বনামধন্য ছিল।
কিন্তু আমি ইচ্ছে করেই নিজের সমস্যার কারনে
আগের স্কুলটা ছেড়েছি।
সেজন্য নিজের সম্মান রক্ষার্থে নিজেকে খুব
সংযত রাখি।
-
দেখতে দেখতে চলে এলো ১ম সাময়িক
পরীক্ষা।
পরীক্ষায় খুব ই ভালো রেজাল্ট হলো।যা কিনা
স্কুলের স্যারের পুরো সহানুভূতি আমার দিকে করে
দিলো।
এর সাথে সাথে ক্লাসের ভাল ছাএ-ছাএী গুলো ও
আমার সাথে বন্ধুত্ব করতে চাইতো।তাই
বন্ধুত্ব করলাম।তবে ছেলেদের
সাথে,মেয়েদের নয়।
খুব ভাল সময় যাচ্ছিল।নতুন স্কুলটা খুব আপন হয়ে
গেল।
আমাদের সাথে ই পড়তো একটা মেয়ে।
দেখতে খুব সুন্দরী কিন্তু ছাএী হিসেবে ভালো
না।
মাঝে মাঝে আমাকে দেখতো,তা আমি দেখতাম।
কিন্তু বুঝতে দিতাম না।
কিন্তু হঠাৎ একদিন স্কুলে যাওয়ার পর বন্ধুদের সাথে
আড্ডা দিচ্ছিলাম।
তখন পিছন থেকে কেউ একজন রিজভী ভাইয়া বলে
ডাকলো।
আমি ঘুড়ে তাকালাম।
তাকিঁয়ে দেখি একটা মেয়ে।
জ্বি বলুন।
ভাইয়া আমি রিতু।
আমি বললাম,হুম।
সে বলল,আমি নিঝুম এর বান্ধবী।নিঝুম আপনাকে কিছু
বলতে চায়।
নিঝুম খুব কান্না করছে।
আমি একটু অবাক হয়ে বললাম,তো আমি কি করবো
বলেন??
আমার সাথে কি কথা বলবে উনি??
মেয়েটি বলল,আপনি শুনলেই বুঝতে পারবেন।
যেহেতু কান্না করছে শুনলাম,তাই কি বলে তা শুনার
জন্য খুব কৌতূহল জাগলো।
তাই নিঝুম এর কাছে গেলাম।
আমি নিঝুমের কাছে যেতেই নিঝুম আমার হাতটি ধরে
খুব কাঁন্না করছিল।
আমি হতভম্বের মতো তাকিঁয়ে রইলাম।
সে বলতে লাগলো,জানো রিজভী আমি
তোমাকে অনেক পছন্দ করি।ভালো ও বাসি খুব।
কিন্তু কখনই বলতে পারিনি।
কিন্তু এখন আমার পরিবার আমার বিয়ে ঠিক করে
ফেলেছে।
বর পক্ষ আমাবে আংটি পড়িয়ে রেখে গেছে।
আমি তোমাকে ছাড়া কাউকেই বিয়ে করবোনা।
এখন তুমি কিছু একটা করো।
আমি কিছুই জানিনা।
শুধু জানি আমি তোমাকে ছাড়া আর কাউকেই বিয়ে
করবোনা।
আমি শুধু নিঝুমের কথা গুলো শুনছিলাম।
কি বলবো বুঝতেছিলাম না।
তবে নিঝুমের কান্না দেখে খুব মায়া হচ্ছিল।
অনেক ভেবে চিন্তে অবশেষে সিদ্ধান্ত নিয়েই
নিলাম।
নিঝুম কে বললাম,আচ্ছা ঠিক আছে আমি তোমার
মায়ের সাথে কথা বলবো।
পরে বাসায় গিয়ে সত্যি সত্যিই নিঝুমের মায়ের সাথে
কথা বললাম।
বলে রাখা ভালো নিঝুম আমার পরিচিত এক বড় ভাইয়ের
বোন।ওই বড় ভাই আমাকে অনেক ভালো জানে।
সেজন্যই আমি সাহস করে এত দূর করতে পারলাম।
নিঝুমের মা কে অনেক বুঝিয়ে রাজি করলাম,নিঝুম
কে যেন আমার জন্য রেখে দেয়।
আমি ৪বছর পর নিঝুম কে বিয়ে করবো।আর
এতদিনে নিঝুম ও পড়াশোনা করবে।
পরে আমার ভাগ্য ভালো নিঝুমের মা আমার কথা মত
নিঝুমের বিয়েটা আটকে দিল এবং আমাকে ৪বছর সময়
দিল।
নিঝুমের মা বলল,বাবা রিজভী।
আমি তোমার কথামত নিঝুম কে রেখে দিলাম।
দেখো তুমি কিন্তু পরে আমার মেয়েটাকে
ঠকিয়ো না।
নিঝুমের মায়ের হ্যা সুচক মতামতে আমাকে আর পায়
কে।

রোমেন্টিক পেত্নী........
সুখের আর অন্ত নাই।
শুরু করে দিলাম নিঝুমের সাথে প্রেম করা।
ফোনে কথা বলা,রোজ ক্লাশের ফাঁকে ফাঁকে
উকিঝুকি ভালোই চলছে।
সেম ইয়ার রিলেশন যা হয় আর কি।
সব চেয়ে মধুর সম্পর্ক হল সেম ইয়ার প্রেম করা।
তবে এত কিছুর মধ্যে ও মেইন পয়েন্ট ঠিক রাখলাম।
মানে পড়াশোনায় কোন গাফিলতি নয়।
নিজে ও খুব পড়তাম।আর আমার জান পাখিটাকে ও
অনেক সাহায্য করতাম।
যাতে করে দুজনই ভালো রেজাল্ট করতে পারি।
যেহেতু নিঝুম পড়াশোনায় ততটা ভালো ছিলোনা,তাই
ওর জন্য আমার খুব খাটতে হলো।
নোটস করে দেওয়া, কোচিং এ নিয়ে যাওয়া,বাসায়
পৌছে দেওয়া,ঠিক মত পড়ছে কিনা তা দেখাশোনা
যেন আমার দৈনিক ডিউটি হয়ে গেল।
সব কিছু ভালোই চলছিল।
খুব ভালো একটা সময় কাটাচ্ছিলাম।
আমার বাসায় ও ব্যাপার টা জেনে গেছে,তবে আমার
পড়াশোনায় অবনতি না থাকার কারনে আমার পরিবার ব্যাপার
টা ভালো ভাবেই নিল।
আমি ছিলাম পরিবারের ছোট ছেলে।
তাই আমার পরিবারের কাছে আমার সুখ টা ই ছিল মেইন
ব্যাপার।
তাই সবাই নিঝুম কে ভালো ভাবেই মেনে নিলো।
সব মিলিয়ে এত ভালো সময় কাটাচ্ছিলাম যা ভাষায় প্রকাশ
করতে পারবোনা।
কিন্তু সুখ দুঃখের যে পাশাপাশির অবস্থান।
তাড়া যে একে অন্যকে ছাড়া থাকতে পারেনা।
আমার জীবনেও তার ব্যতিক্রম হলোনা।
আমাদের এস.এস.সি পরিক্ষা যখন চলছিল, তখন
থেকে শুরু হয়ে গেল সব সমস্যা।
নিঝুম আমাকে আস্তে আস্তে অবহেলা করতে
শুরু করে দিল।
অতিরিক্ত ভালোবাসাই তার কারন ছিল কিনা, তা আমি জানিনা।
খুব বেশি গুরুত্ব দিতাম।
নিঝুম কে নিয়ে অনেক রঙিন স্বপ্ন দেখতাম।
সে জন্য ই স্বপ্ন গুলো ভাঙতে দেখতে
পারতেছিলাম না।
তবে কি করার,বাস্তব কে তো মেনে নিতেই
হবে।
যে নিঝুম একদিন কথা না বলে থাকতে পারতোনা।
সে ২-৩ দিন ও কথা না বলে ঠিক ই কাটিয়ে দিচ্ছে।
কি হচ্ছিল কিছুই বুঝতেছিলাম না।
নিজেকে মানাতে পারছিলাম না।
খুব কষ্টে পরীক্ষাটা শেষ করলাম।
-
পরীক্ষাটা শেষ করেই নিঝুম তার মামা বাড়ি বেড়াতে
চলে গেল।
এতে করে আমার মনের উপর আরো বেশি চাপ
পড়ে গেল।
কেননা এতদিন তো তাও একটা বার দেখতে পারতাম।
এখন তো আর তাও সম্ভব না।
বাধ্য হয়ে নিঝুমের বাসায় তার মায়ের কাছে গেলাম।
সব খুলে বললাম,জিঙ্গাসা করলাম নিঝুম হঠাৎ এত পাল্টে
কেন গেল??
তিনি বললেন,কিছুনা।মামার বাড়ি বেড়াতে গেছে।
ওখানে সবাই আছে,তাই কথা বলতে সমস্যা হচ্ছে
হয়তো।
বাসায় আসলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।
তুমি কোন চিন্তা করোনা রিজভী নিঝুম তোমারি
আছে,আর তোমারি থাকবে।
কথাটা শুনে যেন মনে আবারো একটা আশার
প্রদীপ পুরোদমে জ্বলে উঠলো।
শান্ত মনে বাসায় চলে আসলাম।
কিন্তু অবস্থা ক্রমশই প্রতিকূলে যাচ্ছিল।
আমি সারাদিন কল করলেও নিঝুম তেমন ফোন টা
উঠাতো না।
আর উঠালেও সমস্যা আছে, এটা সেটা বলে কল
কেটে দিত।
এর মধ্যে প্রতিরাতেই ১২ টার পর ঘন্টার পর ঘন্টা ওর
ফোন ওয়েটিং পেতাম।
জিঙ্গাসা করলে বলতো বান্ধবীর সাথে কথা
বলছে।
আমি সব কিছু বুঝে ও না বুঝার মতো থাকতাম।
যাতে করে নিঝুম কে না হারাতে হয়।
আমি সারাক্ষণ কল করতাম বলে নিঝুম আমার নম্বরটা
ব্লাক লিস্টে রেখে দিল।
কোন পথ না পেয়ে আব্বু আম্মুর ফোন থেকে
কল করতাম।
অবশেষে আব্বু আম্মুর নম্বর ও ব্লাক লিস্টে
রেখে দিল।
আমার আর বুঝতে বাকি রইলো না নিঝুমের এত
পরিবর্তন এর কারন।
নিঝুম নতুন কোন সম্পর্কে জড়ীয়ে পড়েছে।না
হল এত রাতে সে কার সাথে কথা বলবে।তাও এতটা
সময় ধরে।
সব বুঝতাম।তাও কেন জানি অবুঝ মনটাকে বুঝাতে
পারতাম না।
নতুন নতুন সিম কিনে নিঝুম কে কল করতাম।
আমার কন্ঠ স্বর শুনলেই নিঝুম কল কেটে দিতো।
এর মধ্যে আমাদের এস এস সি পরীক্ষার রেজাল্ট
বের হয়ে গেল।
একটুর জন্য আমার গোল্ডেন টা ছুটে গেল।
সাইন্স থেকে A+ আসলো।
আর নিঝুম ও কমার্স থেকে A গ্রেড পেয়ে পাশ
করলো।
-
তারপর আসলো সেদিন....
যেদিন জানতে পারলাম,নিঝুমের আমার লাইফে আসার
কারন।
আমি পাগল প্রায় হয়ে নিঝুম কে কল করছিলাম,আর সে
কাটতেছিল।
এক পর্যায় বিরক্ত হয়েই সে কল টা রিসিভ করলো।
আমি আকুতির স্বরে বললাম,কেন এমন করতেছো
আমার সাথে?
কি দোষ করেছি আমি?
প্লিজ আগের মতো হয়ে যাও।
পারবোনা তোমাকে ছাড়া থাকতে।
খুব বেশি ভালোবাসি তোমায়।
নিঝুম তখন বলেছিল,তোমার কি খুব কষ্ট হচ্ছে
রিজভী??
আমার ও হয়েছিল,যেদিন তুমি স্কুলে সবার সামনে
আমাকে অপমান করেছিলে।
আমি না হয় ফোন করে তোমার সাথে একটু মজা
করেছিলাম,তাই বলে তুমি স্কুলে সবার সামনে
আমাকে যা নয়,তা বলেই অপমান করবে??
সেদিন ই প্রতিঙ্গা করেছিলাম,ওই অপমানের জবাব সুদ
সমেত ফেরত দিবো।
আর তা আমি পেরেছি ও।
আমি বললাম,অপমান কি আমি সাধে করেছিলাম বলো?
তুমিই তো আমাকে রং নম্বরে কথা বলে বোকা
বানিয়েছো এবং তোমার মা,ভাইয়ার চোখে ছোট
করেছো।
এমন কি তোমার ভাইয়া কে দিয়ে পিটানি খাওয়ানোর ও
প্লেন করেছিলে।
বলো তো দোষটা কার বেশি ছিল??
নিঝুম তখন একটু মেজাজি গলায় বলে উঠলো, দোষ
গুনের হিসেব করার টাইম নাই।
যা বলার সরাসরি ই বলে দেই।
আমি কখনই তোমাকে ভালোবাসিনি।
সবটাই ছিল তোমাকে ধোকা দেওয়ার জন্য।
তোমাকে এইটা বুঝাতে চেয়েছিলাম যে,কাউকে
অপমান করলে কেমন লাগে।
আমি শুধু কান্না করে এইটা বলেছিলাম,নিঝুম ওই
অপমানের জন্য যদি স্কুলে সবার সামনে দু গালে
দুইটা থাপ্পড় ও মারতে এত কষ্ট হতোনা।
তুমি আমার জীবন টা নিয়ে কেন এত বড় গেইম
খেল্লা।
পারবোনা আমি তোমাকে ছাড়া বাচঁতে প্লিজ ফিরে
এসো আমার জীবনে।
নিঝুম বলল,আরে বোকা ফিরে যাওয়ার জন্যই কি
ছেড়ে দিয়েছি?
আমি আবির কে ভালোবাসি।
আর ওরে নিয়েই ভালো থাকবো।
দয়া করে আমাকে আর বিরক্ত করোনা।
কথা গুলো বলতে বলতে কলটা কেটে দিলো।
কান্না ও করতে পারছিলাম না।
বেশি কষ্টে নাকি চোখ দিয়ে পানি ও বের হয়না।
চোখের পানি ও তখন বেঈমান হয়ে গেল।
তবে হৃদয়ে প্রতিনিয়ত রক্ত ক্ষরণ হচ্ছিল।যা বলে
বুঝাতে পারবোনা।
পাগলের মতো হয়ে গেলাম।
হাত কাটতাম,ব্যথাই লাগতোনা।
মনে হতো সব অনুভুতি যেন মারা গেছে।
আমার এমন পরিস্থিতিতে আমার মা খুব করে ভেঙ্গে
পড়লো।
তাই উনি কোন উপায় না দেখে নিঝুম কে যেভাবেই
হোক কল করে অনেক বুঝালো।
বলল,দয়া করে আমার ছেলেটাকে এভাবে শেষ
হতে দিয়োনা।
প্লিজ ফিরে এসো।সব ভুলে তোমাকে মেনে
নেবো।
না হলে যে আমার ছেলে টা বেচেঁ থেকে ও
জিন্দালাশ হয়ে যাবে।
কত আকুতি মিনতি কিন্তু নিঝুম শুধু বলল,তা আর সম্ভব নয়
আন্টি।নিজের ছেলেকে সামলান।
আর আমাকে ও ভালো থাকতে দিন।আশা করি আমাকে
আর আপনি বা আপনার ছেলে কোন ভাবেই বিরক্ত
করবেন না।
বলেই কলটা কেটে দিল।
সেদিন আমার মা আমাকে জড়ীয়ে অনেক
কেদেঁ ছিল।
হঠাৎ মা খুব অসুস্থ হয়ে পড়লো।
ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার পর শুনলাম হার্টের
সমস্যা।
অতিরিক্ত চিন্তার ফলেই নাকি এমন টা হয়েছে।
মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়লো।
কি করছি আমি??
একটা মেয়ের জন্য নিজেকে এবং পরিবারের মানুষ
গুলো কে কষ্ট দিচ্ছি?
যদি মায়ের কিছু হয়ে যায় পারবো কখনও নিজেকে
ক্ষমা করতে??
সব কিছু ভাবতে ভাবতে যেন পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম।
নিজেকে আয়নায় দেখে নিজেই চিনতে পারিনা।
চেহারার এমন অবস্থা হয়েছে।
কিন্তু সব কিছু থেকে তো যেকোন উপায়ে বের
হতেই হবে।
কিন্তু উপায় টা কি??
আম্মুর কাছে গিয়ে বললাম,আম্মু আমি স্বাভাবিক
জীবনটাতে আবার ফিরে যেতে চাই,কি করলে তা
সম্ভব বলো তো??
তখন আম্মু বললো,নামাজ পড়ো।দেখবে আল্লাহ
তোমার সব সমস্যা সমাধান করে দিবে।
আর আমার দোয়াতো সবসময় তোমার সাথে
আছেই।
আল্লাহ অবশ্যই রহত করবে।
আল্লাহর দরবারে অনেক কান্না কাটি করার পর আল্লাহ
হয়তো আমার প্রতি সদয় হয়েছিলেন,তাই আমি
অনেকটাই স্বাভাববিক হয়ে গেলাম।
বাসায় এসে পুড়োদমে নামাজ,কুরআন পড়া,পড়াশোনায়
মন দিলাম।
তবে নিঝুম কে যে মনে পড়েনা,তা না।
তবে মনে পড়লে প্রকাশ করতাম না।
নিজেকে কোন না কোন কাজে ব্যস্ত করে
ফেলতাম।
সব যখন ভুলে যাওয়ার পথে তখন হঠাৎ একদিন..
-
নিঝুম আমাকে আবার কল করলো।
অচেনা নম্বর না বুঝেই কলটা রিসিভ করলাম।
তবে হ্যালোটা শুনেই বুক টা মোচড় দিয়ে
উঠলো।
সেই চিরচেনা কন্ঠস্বর।
বুঝলাম নিঝুম কল করেছে।কিন্তু তেমন কোন
আগ্রহ দেখালাম না।
খুব স্বাভাবিক ভাবেই কথা বললাম।
তবে মনে হলো গল্পে কোন নতুন কাহিনী
যোগ হইছে।
সে কল করে খুব কান্না জুড়ে দিল।
খুব ভুল করেছি,আবার ফিরে আসতে চাই।
তোমার পায়েই কাটিয়ে দিবো সারাটা জীবন এইসব
বলতে লাগলো।
তবে কেন জানি আজকে ওর কান্না টা তেমন হৃদয়
ছুতে পারলোনা।
হয়তো অনুভুতিটাি আর নাই।
যাই হোক আমি সুধু বললাম,আবার কোন অপরাধের
শাস্থি দেওয়ার জন্য কল করেছো বলো??
আর কত অভিনয় করবে?
এত কষ্ট দিয়ে ও কি তোমার শখ মেটেনি??
আরো কষ্ট বাকি আছে দেওয়ার মত??
তবে প্লিজ নিঝুম আমাকে মুক্তি দাও।
আর নিতে পারবোনা।
আমি ও তো একটা মানুষ নাকি??
কথাগুলো বলে শেষ করেই কলটা কেটে দিলাম।
তারপর থেকেই নিঝুম আমার সাথে নানাভাবে
যোগাযোগ করার চেষ্টা করতো।
প্রথম প্রথম এড়িয়ে চললেও মাঝ খানে কতদিন আমি
আবার নিঝুমের কান্নার মায়ায় পড়ে গেলাম।
আবারো আব্বু- আম্মুর আড়ালে লুকিঁয়ে লুকিঁয়ে
নিঝুমের সাথে কথা বলতাম।
কিন্তু পৃথিবীতে নাকি আর যাই হোক মায়ের চোখ
কে ফাঁকি দেওয়া যায় না। মা ঠিকিই বুঝতে পারলো আমি
যে আবারো নিঝুমের সাথে কথা বলি।
তাই মা আমাকে ডেকে বললল,দেখ রিজভী
নিঝুমের সাথে কথা বলা বন্ধ কর।
না হলে তুই আবারো কাদঁবি।
মা নানা ভাবে আমাবে বুঝানোর চেষ্টা করলো।তাও
যখন কথা চালিয়ে যাচ্ছিলাম,
মা আবারো আমার জন্য চিন্তা করে অসুস্থ হয়ে
পড়লো।
তাই ভেবে দেখলাম আর যাই করি না কেন,নিঝুমের
জন্য নিজের পরিবারকে তো আর কষ্ট দিতে
পারবোনা।
তাছাড়া নিঝুম যে আবারো আমাবে ছেড়ে
যাবেনা,তার ও তো কোন গ্যারান্টি নেই।
তাই খুব কষ্ট হলেও নিঝুমের সাথে যোগাযোগটা
বন্ধ করে দিলাম।
এর মধ্যে নিঝুম ও নাকি পাগলামি শুরু করে দিয়েছে।
তাই ওর মা একদিন আমার মায়ের কাছে আসলো।
কিন্তু আমার মা দ্বিতীয় বার কোন রিক্স নিতে
চাইলেন না।
তাই তিনি সরাসরিই নিঝুমের মা কে আমাদের বাসা
থেকে বের হয়ে যেতে বললেন।
আরো বললেন,আমার ছেলেটা মরতে মরতে
বেচেঁ গেছেন,খুব কষ্টে আবারো পড়াশোনায়
মন দিয়েছেন।
আপনারা দয়া করে আর আমার ছেলের জীবন টা
বরবাদ করে দিবেন না।
ভালো ভাবে আমার বাসা থেকে বেড়িয়ে যান।আর
ভবিষ্যৎ এ ও কখনই যেন আপনার মেয়ে আমার
ছেলের দ্বারে কাছে ও না আসে।
কি আর করার,নিঝুমের মা চলে গেল।
পরে আর কি,
নিঝুমের সাথে আর যোগাযোগ হলোনা।
জানিনা কি ভেবে ফিরে আসতে চেয়েছিল?
নিজের ভুল বুঝতে পেরে নাকি ভবিষ্যৎ এ আরো
কষ্ট দিতে???
-
তাই এখন নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছি নিজের মতো
করে।এখন আর কোন নিঝুমের জন্য চোখের
জ্বল নষ্ট করিনা।
নিজেকে কষ্ট দেইনা।
খুব ভালো আছি,তবে কেন জানি আর কাউকে ওই
নিঝুমের স্থান টা তে বসাতে পারিনা।তবে চেষ্টা ও
করিনা।
...

Comments

Popular posts from this blog

-------------------: রাগিনী

---ও মাগো এই ভোর বেলা বৃষ্টি এলো কোথা থেকে??? ---বৃষ্টি না আমি পানি ঢালছি। ---ঐ পেত্নী তুই পানি দিলি ক্যান???? ---আমার কলেজে দেরি হয়ে যাচ্ছে, আর তোর অফিসে। ---এই ভোর বেলা আমার মতন মাসুম ছেলের ঘুমের বারটা বাজিয়ে আবার মিথ্যা বলিস পেত্নী। ---এই নে দ্যাখ কয়টা বাজে, আজ যদি আমার কলেজে দেরি হয় না দেখাবনে। আর পেত্নী বলার সাধটা তোলা রইল। ---ও মা, ৯টা বাজে। তুই যা আমি আসছি, নাশতা রেডি কর। তারাতারি বাথরুমে ঢুকলাম, আজ খবর আছে নতুন বস আসছে আজ। আর আজ যদি দেরি হয় খবর আছে। আসুন পরিচয় দিয়ে নিই, আমি শিমুল, আর ঐ পেত্নী নিঝুম, এক মাত্র আদরের বোন, আর বাবা, মা নিয়ে চার জনের ছোট্ট একটা পরিবার। ---ও মা, তারাতারি নাশতা দাও। ---আদ দামড়া ছেলে বেলা করে ঘুমিয়ে এখন আসছে। ---কথা বল না তো। কী রে পেত্নী তুই রেডি তো। ---আমি তোর মতন লেট লতিফ নাকি, আমি রেডি। ---দেখিস তোরে একটা লেট লতিফ মার্কা ছেলে দেখেই বিয়ে দিব। রেডি হয়ে বের হলাম দুই ভাই বোন। আমার অফিস যাবার পথেই ওর কলেজ পরে, তাই একসাথেই নিয়ে যেতে হয়। গল্প করতে করতে ওর কলেজ পৌছে গেছি, ---এই পেত্নী নাম তোর কলেজ চলে আসছি। যা ক্লাসে য...

অবুঝ ভালোবাসার গল্প

----ঠিক এই মুহুর্তে আমাকে এক দল মেয়ে গুন্ডা ঘেরোয়া করে রেখেছে, কি অপরাধ করেছি বা কার পাকা ধানে মই দিয়েছি কিছুই জানিনা।।। কোচিং করে বের হয়ে ফাকা মাঠে বসে গল্পের বই পড়ছি।। ঠিক সেই সময় সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে মেয়েরা হাজির।। আমি ভয়ে ভয়ে বললাম,, __কি বেপার।।। আমাকে ঘেরাও করে কি খুন করার প্লান করা হচ্ছে নাকি?? মেয়েদের সবাই একসাথে বলল,, __ঠিক তা নয়।। তবে আমাদের কথা না শুনলে হয়ত খুন করতেও পারি।। কি সাংঘাতিক বেপার!! এরা খুন করার কথা কত্ত সহজে বলছে।। মনে হচ্ছে খুন করা ওদের কাছে ডালভাত।। যাই হোক আমি বললাম,, __আমাকে কেন এভাবে ঘেরাও করা হয়েছে বলা যাবে কি?? __অবশ্যই বলা যাবে।। আগে আপনি বলুন তো আপনি নিজেকে কি ভাবেন?? সালমান খান?? __খান নয়।। তবে আমার নাম সালমান সাদিক মনে করি।। __সে যেই হোন না কেন। আপনি আমাদের বান্ধবী তিথিকে এভাবে ঘোরাচ্ছেন কেন?? __কিভাবে ঘোরালাম?? __ও তো আপনাকে অনেক পছন্দ করে।। আপনি ওকে পাত্তা দিচ্ছেন না কেন?? __তাহলে এই বেপার।। আপনারা এখন আমার কাছে কি আশা করছেন?? আপনাদের বান্ধবীর কাছে গিয়ে মাফ চেয়ে আসবো?? __জি হ্যা।। আর তাকে তার অধিকার ফিরিয়ে দিন।। __...

কাল ছেলের ভালবাসা............

------- ---এই তুমি ওই মেয়েটার দিকে তাকাচ্ছ কেন???? ---কই কোন মেয়ে, আমি তো কোন মেয়ের দিকে তাকায় নি। ---আমি দেখছি, তুমি তাকাইছো। তুমি আমাকে আর ভালবাস না। ---আরে এখানে ভাল না বাসার কী হল??? ---আমি জানি এখন আর আমাকে ভাল লাগেনা, পুরাতন হয়ে গেছি না। ---মানুষ কী কখন পুরাতন হয় পাগলি???? ---ও এখন মানুষ হয়ে গেলাম আমি। ---আরে কী বলি আর তুমি কী বুজছ??? ---আর বেঝাতে হবে না, আমি বুঝে গেছি। থাক তুমি আমি গেলাম। বলে অভিমানে গাল ফুলিয়ে চলে গেল ইভা। পাগলিটা কী করে না, ছোট খাটো বিষয় নিয়ে একটুতে রেগে যায়। অনেক চেষ্টা করলাম ওকে আটকাতে, কোন লাভ হল না। ওর চলে যাওয়া পথের দিকে অপলক তাকিয়ে রয়েছি। মেয়েটা বড্ড অভিমানি। একটু বেশিই বৈকী...... ও হ্যা, আমি নাঈম, আর যে চলে গেল সে ইভা। আমরা দেশের সনাম ধন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র-ছাত্রী । ও যে আমাকে কি দেখে ভালবাসছিল, একমাত্র ও নিজেই জানে। আমি দেখতে শুনতে খুব একটা ভাল নয়, কালো একটা ছেলে, পারিবারিক অবস্থাও খুব একটা ভাল না। কিন্তু এই মেয়েটি আমাকে প্রথম এসে প্রপজ করে। প্রথমে ওকে ফিরিয়ে দিলেও পরে শুরু হয় ওর পাগলামি। এক সময় ওর...