Skip to main content

-------------------: রাগিনী

---ও মাগো এই ভোর বেলা বৃষ্টি এলো কোথা
থেকে???
---বৃষ্টি না আমি পানি ঢালছি।
---ঐ পেত্নী তুই পানি দিলি ক্যান????
---আমার কলেজে দেরি হয়ে যাচ্ছে, আর তোর
অফিসে।
---এই ভোর বেলা আমার মতন মাসুম ছেলের
ঘুমের বারটা বাজিয়ে আবার মিথ্যা বলিস
পেত্নী।
---এই নে দ্যাখ কয়টা বাজে, আজ যদি আমার
কলেজে দেরি হয় না দেখাবনে। আর পেত্নী
বলার সাধটা তোলা রইল।
---ও মা, ৯টা বাজে। তুই যা আমি আসছি,
নাশতা রেডি কর।
তারাতারি বাথরুমে ঢুকলাম, আজ খবর আছে
নতুন বস আসছে আজ। আর আজ যদি দেরি হয়
খবর আছে।
আসুন পরিচয় দিয়ে নিই, আমি শিমুল, আর ঐ
পেত্নী নিঝুম, এক মাত্র আদরের বোন, আর
বাবা, মা নিয়ে চার জনের ছোট্ট একটা
পরিবার।
---ও মা, তারাতারি নাশতা দাও।
---আদ দামড়া ছেলে বেলা করে ঘুমিয়ে এখন
আসছে।
---কথা বল না তো। কী রে পেত্নী তুই রেডি
তো।
---আমি তোর মতন লেট লতিফ নাকি, আমি
রেডি।
---দেখিস তোরে একটা লেট লতিফ মার্কা
ছেলে দেখেই বিয়ে দিব।
রেডি হয়ে বের হলাম দুই ভাই বোন।
আমার অফিস যাবার পথেই ওর কলেজ পরে,
তাই একসাথেই নিয়ে যেতে হয়।
গল্প করতে করতে ওর কলেজ পৌছে গেছি,
---এই পেত্নী নাম তোর কলেজ চলে আসছি। যা
ক্লাসে যা।
---টাকা দে, আইসক্রিম আর ফুসকা খাব।
---টাকা নেয় যা ভাগ।
---না দিলে আমি ক্লাসে যাব না, তারপর
বাড়ি গেলেই বুঝবি।
---থাক আর বোঝাতে হবে না এই নে, এখন যা।
---অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া, সাবধানে যাস।
---তোকে বলতে হবে না ভাগ এখন।
অফিসে পৌছাতে আধা ঘন্টা লেট আজ, অন্য
দিন লেট করি না। আজ নতুন বস আসছে আর
আজকেই লেট হতে হল, কপাল আমার????
কোনরকম এসে নিজের ডেস্কে বসলাম, পিওন
চাচার আগমন। নতুন ম্যাডাম আপনাকে
ডেকেছে তাঁর কেবিনে।
---এইরে কাম সারছে, তুমি যাও আমি যাচ্ছি ।
তাঁর মানে নতুন বস কোন মেয়ে হবে।
বসের কেবিনের দিকে হাটা দিলাম।
---আসতে পারি????
---হ্যা আসুন। (ফাইলে মুখ লুকিয়েই?
---আমি শিমুল, আমাকে ডেকেছিলেন ম্যাম????
---জি, বসুন। (বলেই ফাইল থেকে মুখ তুলল)
আমি তো জিবনের প্রথম ক্রাশটা খেয়েই
নিলাম পানি ছাড়াই।
এই মেয়ে না পরী। যদিও কখনই পরি দেখিনি,
টানা টানা চোখ, বাঁশির মত নাক, গভীর দুটি
চোখ, রেশমী কালো চুল, কমলার কোমার মতন
ঠোট। আর কী চাই???
---এইযে কোথাই হারালেন???
---ননননা এখানেই আছি।(সপ্নের দেশে চলে
গেছিলাম)
---তা আজ অফিসে লেট ক্যান??? আগে তো
কখনই লেট নেই দেখলাম। আফিস কামায়
দেয়ার রেকর্ড ও নেই। তবে....
---আসলে আজ ঘুমের জন্যই লেট।
---আপনি জানতেন আজ নতুন বস আসছে???
---হ্যা।
---এইটা কী জানেন??? (একটা ফাইল দেখিয়ে)
---না...
---আপনার সকল ডিটেল্স আছে এখানে তাই
দেখছিলাম। কোন খারাপ রিপোর্ট নেই বলে
বেঁচে গেলেন আজ। আর এত বছর একই পৌষ্টে
কাজ করছেন, কয়েক বার প্রমোশন দেয়া
হয়েছে ফিরিয়ে দিয়েছেন ক্যান????
---আসলে প্রমোসন নিলে এত দিনে আমাকে এই
রুমেই বসতে হত, আর আমি একা কাজ করতে
পছন্দ করি না। তাই ফিরিয়ে দিয়েছি। সবার
সাথে কাজ করে অনেক মজা যা বস হয়ে এই
একলা রুমের মাঝে নেই। (অফিস প্রমোশন দেয়
আর আমি তা নেই না, শুনলে অবাক হওয়া ছাড়া
কারো কিছুই করার নেই)
---হুম বুঝলাম, এর পর যেন লেট না হয়, আর আমি
আপনার অনেক ছোট তাই ম্যাডাম বলার দরকার
নেই, সবার মত নাম ধরেই ডাকতে পারেন।
বয়সেও আপনার ছোটই হব।
আমি নুরজাহান আমাম্মেদ নিশি। নিশি বলে
ডাকলেই হবে।
এখন আসুন, গিয়ে নিজের কাজ করুন।
বুঝলাম মেয়েটা খুব মিশুখ মনের মানুষ।
নিজের ডেস্কে এসে বসলাম, আর ভাবতে
লাগলাম, এখন কেও না বললেও আগেই আসব,
লেট করা চলবে না মায়াবতী আমি যে তোমার
মায়াই পরেছি, সেটা যদি তুমি জানতে......
ডেস্কে বসে মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে
লাগলাম,
বিকেলে অফিস শেষ করে বাড়ি ফিরলাম।
কোন আড্ডা দিলাম না, কাল থেকে দেরি
করা চলবে না অফিসে।
কলিং বেল বাঁজাতেই বোন দরজা খুলেই
অবাক নয়নে চেয়ে রইল।
হঠাৎ কাছে এসে কপালে হাত দিয়ে দেখতে
লাগল।
---কিরে জ্বর তো নেয়, শরিল খারাপের কোন
লক্ষন তো দেখছি না। সূর্য আজ কোন দিকে
ডুবছে?? (বাইরে উকি দিয়ে)
ও মা দেখে যাও তোমার ছেলের কী যেন
হয়েছে।
---ঐ পেত্নী সরবি দরজা থেকে, তখন থেকে কী
সব বাজে বকছিস।
---যে রাত ৯ টার আগে বাড়ি আসেনা সে আজ
সন্ধার আগেই বাড়ি ফিরছে, এইটা একটা
বিশ্বের অষ্টম অশ্চর্য নয়????
----চুপ একদম চুপ.....
রুমে এসে ফ্রেশ হলাম,
---মা খাবার দাও তো।
---আই দিচ্ছি ।
---এক তরকারি দিয়ে খাওয়া যায়??? আরো
রান্না করতে পার না????
---কতবার বললাম একটা বিয়ে করা, কত মেয়ে
দেখাইলাম, নবাবের পছন্দই হয় না। আর আসছে
নানান পদের রান্না নিয়ে....
---বাদ দাও তো মা, তোমাদের আর মেয়ে
দেখতে হবে না।
---আমি যে কত কষ্ট করি তা তুই যদি বুঝতি তবে।
---আর কষ্ট করতে হবে না, খুব তারাতারিই
তোমার কষ্ট কমিয়ে দিব। (মনে মনে)
---কিরে ভাইয়া মনে মনে কি বকছিস???
---চুপ পেত্নী বেশি পাকনা হয়ছিস????
মনোবিজ্ঞানী হলি কবে, যে মনের কথাও
বুঝে ফেলছিস?????
---এখন তো আমিই পাকনা হলাম।
রাতে আর বাইরে গেলাম না, সকাল সকাল
ঘুমিয়ে পড়লাম।
পরের দিন সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে রেডি
হলাম, অফিসের জন্য, কাওকে ডাকতে হয়নি
আজ। কখন যে ওই মায়াবীনিকে দেখতে পাব
সেই আশায় সারা রাত ভাল ঘুমও হয়নি।
---নিঝুম এই নিঝুম.....
----
---এই নিঝুম....
----
---কিরে পেত্নী কই গেলি????
---ঐ তুই আমারে পেত্নী বললি আবারো???
---ক্যান ভাল করে নিঝুম বলে যখন ডাকলাম
তখনতো একবারো উওর নিলি না। যেই না
পেত্নী বলে ডাকলাম সাথে সাথে রিএ্যাকসন
করলি। তাহলে আমি কী করব????
---হয়ছে, হয়ছে, সাত সকালে ষাঁড়ের মতন
চিল্লাচ্ছিস ক্যান??????
---কলেজ যাবিনা রেডি হয়ছিস????
বলতে দেরি নিঝুমের দৌড়ে চলে যেতে দেরি
নেই। আমি তো ওর দৌড় দেখে অবাক।
বেশ কিছু খন পরে পাগলীদের মতন মাথা
চুলকাতে চুলকাতে ফিরে এলো। এসেই
---বাইরে তো দেখলাম সূর্য ঠিক ঠিক পূর্ব
দিকেই উঠেছে। তাহলে ভাইয়া তোর কী সত্যি
সত্যি শরিল খারাপ করছে নাকী। কাল সন্ধার
আগেই বাড়ি ফিরলি, রাতেও বাইরে গেলি
না, আজ আবার নিজে থেকেই ঘুম থেকে উঠে
রেডি হয়ে আমাকে ডাকছিস, আমার মাথায়
কিছু ঢুকছে না।
---ঐ পেত্নী তোকে অত বুঝতে হবে না, যা
রেডি হয়ে নাশতা করতে আয়।
বলেই নিজে নাশতা করতে গেলাম।
আমাকে নাশতার টেবিলে দেখে মা বাবা
দুজনেই সেই অবাক।
---কিরে আজ সূর্য কোন দিকে উঠল???? (মা)
----না মা সূর্য ঠিক দিকেই উঠছে, তোমার
ছেলের কিছু হয়ছে কী না দেখ। (নিঝুম)
বাবা আর কিছুই বললেন না।
নাশতা করে পেত্নীটাকে নিয়ে রওনা হলাম।
নিঝুমকে ওর কলেজে নামিয়ে দিয়ে অফিসে
চলে এলাম। আসার সময় কিছু ফুল নিয়ে এলাম।
অফিসে ঢুকেই নিশির টেবিলের উপর রেখে
দিলাম।
জানিনা ও সিঙ্গেল না মিঙ্গেল, সুন্দরী
মেয়েরা যদিও সিঙ্গেল থাকেনা তবুও মন
বলছে আৎে, আর যদি থেকেই থাকে সিঙ্গেল
তবে অন্য কেও মিঙ্গেল করার আগেই আমাকে
ভালবাসার কথা বলে দিতে হবে।
নিজের ডেস্কে বসে কাজ করছি।
কিছু সময় পরেই নিশিও এলো অফিসে, ওকে
দেখেই মুচকি একটা হাসি দিলাম।
ও খেয়াল না করেই চলে গেলো।
ডেস্কে বসে কাজ করছি, কিন্তু কাজে মন
নেই।
প্রতিদিন সবার আগে আফিসে আসা, ফুল এনে
ওর কেবিনে রেখে আসা। ওর সাথে কথা বলার
চেষ্টা করা এইতো চলছে আমার দিন।
এভাবেই চলছে আমার দিন কাল, যেন একটা
রুটিন হয়ে গেছে আমার। বাড়িতে মা বোনের
আচরন আমাকে নিয়ে যে তাঁরা কৌতুহলে
ভুগছে তা বলে না দিলেও চলে। অন্য দিকে
অফিসে নিশির ঝাড়ি, ওকে নিয়ে ভাবতে
গিয়েই সব ফাইলেই কিছু না কিছু ছোট খাট ভুল
আমি করছিই, আর সকালে ওর টেবিলে কিছু
ফুল রাখাটা যেন সবচেয়ে বড় কাজ হয়ে গেছে
আমার, কোন ভাবেই মিস করা চলবে না।
এমডি স্যার দেশের বাইরে ছিল, দেশে এসেই
অফিসে আসলেন।
---এমডি স্যার তোমাকে ডাকছে বাবা। (পিওন
চাচা)
---তুমি যাও আমি আসছি।
---আসতে পারি স্যার????
---সিমুল, ভেতরে এসো।
---ক্যামুন আছেন স্যার?????
---বসো, আমি ভাল আছি, তোমার কী খবর????
---এইতো আছি।
---তা নতুন বস কে ক্যামুন লাগছে।
---সেইরাম লাগছে স্যার। (সাথে সাথে
জিহ্বাতে কামড় দিলাম, যা মুখ ফসকে কি
বলে দিলাম)
---সেইরাম মানে???? কী শিমুল সাহেব, মনে
লাড্ডু ফুটছে নাকী?????
যা স্যারতো ধরে ফেলছে।
---না স্যার তেমন কিছু না আসলে....
---হুম বুঝলাম, সমস্যা নেই লেগে যাও, হতেও
পারে। তবে মেয়েটা কিন্তু বেশ রাগী।
----কি যে বলেন না স্যার। এরকমম মেয়ে
মানুষকে বাগে আনাই তো আসল পুরুষের কাজ
(স্যার রসিক মানুষ তাই সব রকম কথাই চলে
উনার সাথে)
----যাই হোক, তুমি তো আর প্রমোসন নিবে না,
তাই আমাকে বাইরে থেকেই অন্য কাওকে
নিয়ে আসতে হল, আর মেয়েটা নিজের কাজের
প্রতি বেশ যত্নশীল, তাই অন্য কম্পানি হতে
নিয়ে আসছি, যদিও চাকরির বয়স খুব একটা
বেশি না।
---কাজের ধরন দেখলেই বেঝা যায় স্যার ।
---তোমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে কিন্তু,
আমার যে কর্মচারির বিরুদ্ধে আমি কোন
অভিযোগ করতে পারিনি তার বিরুদ্ধে
অভিযোগ ভাল লক্ষন নয় কিন্তু ।
---কী অভিযোগ স্যার????
---তোমার সকল ফাইলেই নাকি কিছু ভুল
থাকেই।
---স্যারি স্যার, আর হবে না। আসলে বোঝেই
তো নজরটা একটু....
---ঠিক আছে এখন আসুন।
---জী স্যার.....
বলেই নিজের ডেস্কে এসে বসলাম, যতই মন
দিয়ে কাজ করার চেষ্টা করি না ক্যান, কিছু
না কিছু ভুল হচ্ছেই।
বেশ অনেক দিন হয়ে গেল এরকম চলছে।
বাড়িতে কিছু গোয়েন্দার চোখের নজড়দারি।
অফিসে নিশির ঝারি।
এতযে চেষ্টা করি কোন ভুল না করার তবুও
কিছুনা কিছু ভুল হয়েই যাই, আর মেয়েটারো
ঈগলের চোখ, ছোট্ট ভুলও ধরে ফেলবেই।
তাই সিদ্ধান্ত নিলাম এবার নিশিকে প্রপজের
কাজটা শেষ করে ফেলি, তাহলেই সব
ঝামেলা চুকে যায়।
যেই ভাবা সেই কাজ, পরের দিন একটা চিঠি ও
কিছু লাল গোলাপ রেখে আসলাম নিশির
টেবিলের উপরে।
কপাল খারাপ হলে যা হয় আর কী
দুপুরে সবাইকে ডেকে জোরে জোরে চিঠিটা
পড়তে লাগল নিশি
মনে মনে ভাবছি যায় হোক ধরা খাবার ভয়
নেই, চিঠি টাইপ করা আর নিচে আমার ডাক
নাম দেয়া যা এই অফিসের কেও যানে না।
কিন্তু আমাকে অবাক করে আমার বিশ্বাসের
উপর রুলার চালিয়ে, আমার নামটা ঘোষনা
করা হল সর্ব শেষে।
বিষটা মাথায় ঢুকতে একটু সময় নিল, কলকেই না
আমাদের অফিসের সবার কেবিনে সি.সি
টিভি ক্যামের বসানোর কাজ শেষ হয়েছে?????
সবাই ক্যামুন করে যেন আমাকে দেখতে লাগল,
নিশি আমার সামনে এসে দাঁড়াল, মনের মতন
অপমান করল।
সেদিন থেকেই শুরু হল আমার উপর নিশির মধুর
অত্যাচার, সবার থেকে বেশি কাজ দেয়, কোন
প্রকার ভুল হলেই হল, অন্যদের বেলাই সাতখুন
মাফ। আমার বেলাই পান থেকে চুন খসলেই হল।
আর কী চাই, গরম তেলে পানি ঢালার মতন
ব্যাপার।
এভাবে আরো কিছুদিন চলে গেল, জিবনটা
আমার তেজ পাতা হয়ে গেছে নিশির ঝারি
খেতে খেতে।
সেদিন একটা গুরত্বপুর্ন ফাইল দিয়েছিল, সব
কাজ শেষ করে যখন পিওন চাচাকে দিয়ে
ফাইলটা পাঠিয়ে দিলাম নিশির কাছে, ঠিক
তাঁর ১ ঘন্টার মাথায় আমার ডাক পড়ল নিশির
কেবিনে।
ভেতরে গিয়ে বসতেই ফাইলটা আমার দিকে
এগিয়ে দিয়েই
---এইসব কী????
---ফাইল, যেটা দিয়েছিলে।
---ফাইল তো আমিও দেখছি, ভেতরের ৫
নাম্বার পেজটা একটু দ্যাখেন ।
ঐ পেজে যাইতেই ও মা। এইটা কী, এইটা তো
নিশিকে নিয়ে লেখা সেই কবিতাটা। এইটা
এখানে এল কীভাবে????
---সরি।
---কীসের সরি, এইটা অফিস এখানে কাজ
করতে আসছেন না প্রেম করতে আসছেন??? মন
কোথাই থাকে, কোনটা ফাইলের কাগজ আর
কোনটা অন্য কাগজ মাথায় থাকে না?????
অন্য আরেক দিন অফিসের মিটিং ছিল, আর
সেখানকার একটা ফাইল আমাকে দেয়া
হয়েছিল দেখার জন্য আর আমি ফাইল
পরিবর্তন করে দিয়েছিলাম অন্য একটা,
মিটিং শেষ করেই নিশি আমার ডেস্কের
সামনে এসেই ফাইটা ছুরে দিল কিছু বুঝে
ওঠার আগেই বলল
---কী এসব, দিলাম একটা আর সেটা পরিবর্তন
করে এইটা কিসের ফাইল দিয়েছেন?????
এভাবে আপনি ঠিক মতন কাজ না করে সব ভুল
ভাল কাজ করার জন্য আজ আমাকে কতটা
অপমান সহ্য করতে হল জানেন??? যত সব ফালতু
লোক। বলেই চলে গেলো।
একদিন দুপুরে নিজের ডেস্কে বসে কাজ
করছি, এমন সময় পিওন চাচা এসে বলে গেলেন
নিশি আমাকে ডেকেছে তাঁর কেবিনে।
এখন আর ভালবাসা উদয় হয়না ওর ডাক শুনলে,
ঝারির ভয়ে চুপসে যায়।
---(দরজাই টোকা দিয়ে) আসতে পারি????
---জি, আসুন। বসুন।
---ডেকেছিলেন??
---এই নিন, বলেই একটা খাম ধরিয়ে দিল।
---কী এইটা???
---পড়ে দেখুন।
কী ভাবছেন, এবার আমার কপাল খুলল???
ভেতরে কেন প্রেম পত্র???? বা আবারো কোন
প্রমোশন লেটার????
তাহলে আপনাদের ধারনা ভুল,
খামের ভেতরে একটা পত্রই ছিল, তবে সেটা
ভালবাসার নয়, বা প্রমোশন নয়, আমাকে
চাকুরি হতে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে সেটাই
জানানো হয়েছে ।
---সামনে সপ্তাই এসে আপনার পাওনা নিয়ে
যাবেন।
নিশিকে আর কিছুই বলিনি, বলার ছিলও না,
চুপি সারেই বেড়িয়ে এলাম নিশির কেবিন
থেকে, শুধু নিশির কেবিন থেকেই নয়, অফিস
থেকেই।
বাড়ি না গিয়ে নদীর পাড়ে চলে আসলাম,
কারন আজ আমার বুকেও নদীর মতই অথই জল।
রাত ১১টাই বাড়ি ফিরলাম, মা দরজা খুলে
দিয়ে কিছুই জানতে চাইনি।
ফ্রেশ হয়ে হালকা কিছু খেয়ে নিয়ে ঘুমিয়ে
পরি।
পরের দিন ঠিক সময় ঘুম ভাঙে, কারন অভ্যাস
হয়ে গেছে এখন।
রেডি হয়ে নাশতা করে বোনকে কলেজে
দিয়ে বাড়ি চলে এলাম। বাবা মা কে কিছুই
বলিনি। বিকেলে বোন বাড়ি ফিরে আমাকে
দেখেই জানতে চাই
---কিরে অফিস থেকে কখন ফিরলি ভাইয়া।
---অফিস যায়নি।
---ক্যানরে, কী হল হঠাৎ???
---এমনি।
রাতে সবার সাথে একসাথে খেতে বসলাম,
শেষ কবে সবাই এক সাথে খেয়েছি মনে নেই।
---তোকে অফিস থেকে ছাড়িয়ে দিল কী জন্য
ভাইয়া????
---কই না তো, কী বলিস????
----তাহলে এইটা কী??? (বলেই সেই নোটিস
দেখাল)
এবার মা বাবার একই কথা কাওকে কিছু না
বলেই রুমে চলে এলাম।
আমাকে এরকম নিরব থাকতে দেখে কেও কিছু
বলেন নিঝুম পেত্নীটাও আগের মতন দুষ্টুমি
করে না, জ্বালাই না।
বাবা মা ক্যামন মন মরা হয়ে থাকে।
সপ্তা খানিক পরে দুপুরে ঘুমাচ্ছিলাম, এমন
সময় এমডি স্যার ফোন দিলেন।
---আসসালামুআলাইকুম, ক্যামুন আছেন
স্যার????
---আমি ভাল আছি, তুমি????
---এইতো চলে যাচ্ছে স্যার।
---তোমাকে চাকুরি থেকে অব্যাহতি দেয়া
হয়েছে আমাকে জানাওনি তো।
---আপনার তো জানার কথা, আর জানিয়েই কী
হবে। আমার অপরাধের কারনেই তো সব হয়ছে।
---চুপ একদম চুপ, কাল সকাল ৮টায় আমার বাসায়
আসবা।
---বলছিলাম স্যার.....
---আর একটা কথাও না..
---ঠিক আছে স্যার ।
পরের দিন সকালে বোনকে বললাম আজ তুই
নিজেই কষ্ট করে কলেজ চলে যা। আমার একটু
কাজ আছে।
বলে স্যারের বাড়ির দিকে রওনা হলাম,
আগেও অনেক বার আসছি তাই আসতে সমস্যা
হয়নী।
ভেতরে আসতেই
---শিমুল চলে আসছ।
---জি স্যার ।
---চল, অফিস যাবে এখন।
---স্যার আমি না মানে।
---কোন মানে নেয়, আমি আগের শিমুলকে চাই,
যে নিজের কাজেই নিজেই এক্সপার্ট।
স্যারের সাথেই অফিসে আসলাম, আমাকে
দেখে সবাই অবাক নয়নে তাকাল, সেদিনের
পরে আর আসি নি, বেতনের টাকা নিতেও না।
নিজের অর্ধ পতনের জন্য আমি নিজেই তো
দায়ি। যে ভালবাসার মুল্য দিতে জানেনা
তাকেই ভালবাসছি। ওকে বোঝানোর জন্য কত
কিছুই না করছি সেদিন চিঠিটা সবার সামনে
পড়ার পরে। অনেক ভাবে নিজের
ভালবাসাটাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি।
কোন লাভ হয়নি। স্যার দেশের বাইরে থাকার
কারনেই আমাকে চাকরিটা ছাড়তে হয়েছিল,
না হলে তখনই একটা সুয়োগ অন্তত পেতাম।
স্যারের সাথেই স্যারের কেবিনে ঢুকলাম,
স্যার কাকে যেন ফোন করে আসতে বললেন।
কিছুখন পরেই নিশি আসল, আমাকে দেখে তো
ওর চোখ চড়ক গাছে, ভাবছে হয়ত স্যারের হাত
পা ধরে চাকুরিটা ফিরে পেতে চাইছি।
---নিশি, তুমি যে ওকে অফিস থেকে বের করে
দিয়েছ আমাকে জানিয়েছ????
---আসলে স্যার উনার কাজে অতিষ্ট হয়ে
গিয়েছিলাম, আর আপনিও বাইরে ছিলেন।
তাই বাধ্য হয়েই....
---তাই বলে আমাকে জানাবেও না। এত দিন
ওর পাগলামি গুলোই দেখছ, এখন রেডি হও ওর
কাজ গুলো দেখার জন্য। যাও নিজের
কেবিনে, আর এবার আমি ওকে নিজে নিয়ে
আসছি, ওর সব দায়িক্ত আমার।
নিশি চলে গেলো, আমিও চলে এলাম নিজের
ডেস্কে। নিজের ভেতরে একট জেদ চেপে
গেলো, এই মেয়েকে বোঝাতেই হবে আমি কী
জিনিস। আর যে আমার জন্য তারই
কর্মচারিকে চ্যালেঞ্জ করল, তার সন্মানের
কথাও ভাবতে হবে।
---বেশ কয়েকটা ফাইল জমা আছে, ঝট পট
কাজে নেমে পরলাম, বিকেলে পিওন চাচাকে
দিয়েই ফাইল গুলো নিশির রুমে পাঠিয়ে
দিলাম, এখন থেকে আর আমি ওর রুমে যাব না।
নিজের জেদ আর নিশির প্রতি একটা অন্যরকম
অনুভুতি নিয়েই নিজের কাজ করে যাচ্ছি ।
অন্যরকম বলতে ঘৃনা জাতীয় কিছু ।
কয়েক মাসের মাঝেই প্রমোসন পেলাম,
নিজের কাজের প্রতি আরো বেশি করেই জোর
দিলাম, অন্য কোন দিকে তাকানের সময় নেই।
মাথায় একটা বুদ্ধি এলো, নিড়ার সাথে বেশি
বেশি মেশা শুরু করলাম দেখি নিশিকে একটা
জ্বালানো যায় কী না।
ও নিড়া আমাদেরই কলিগ। একে আমার
প্ল্যানের কথা বলতেই ও রাজী হয়ে গেলো।
বেশ কিছুদিন পরেই খেয়াল করলাম নিশি বেশ
ভালভাবেই আমাদের লক্ষ করছে, তার মানে
ঔষধে কাজ করছে।
এতো আমরা আরো বেশি করেই মেশা শুরু
করলাম, নিড়া শুধু বলে বেচারিকে জ্বালাই
কী মজা যে পান। আমি শুধু মুচকী হাসি।
এখন নিশি আমার দিকে লক্ষ রাখে, কাছে
আসার চেষ্টা করে, আমিও সুযোগটা
আরেকবার কাজে লাগাই, ওকে আমার কাছে
আসার সুযোগ করে দিই। আমার ও মিরার
প্ল্যান সম্পর্কে ও ধারনা করে নিয়েছে।
ধিরে ধিরে আমার প্রতি কেয়ার নিতে শুরু
করছে, এখন আমার জন্যও বাসাথেকে নিজে
রেধে নিয়ে আসে, দুপুরে এক সাথে খাই।
এখন বুঝতে পারি নিশি আমার উপর অনেকটা
দুর্বল হয়ে পরেছে।
বাড়ি মা বাবা ও নিঝুমের জন্য টিকতে পারি
না, বিয়ে কর বিয়ে কর, কবে বিয়ে করবি। তাই
গোপনে নিশিরর সকল তথ্য যোগার করে মা
বাবাকে বলে দিলাম ।
সে মতন বাবা মা বিয়ের সব ব্যাবস্থা করে
ফেল্ল। আংটি পড়িয়ে দিয়ে এলো, বাবা মা
তো সেই খুশি, সবচেয়ে বেশি খুশি নিঝুম, সে
ভাবছে তাঁর দলে একটা লোক পাবে যে তাঁকে
সাপোর্ট দিবে আমার বিপক্ষে। ননদ ভাবি
যেমন হয় আরকি।
পরের দিন অফিসে আসতেই নিশি আমার
কেবিনে হাজির,
---কী হল তুমি হঠাৎ আমার কেবিনে????
---কিছু কথা আছে আপনার সাথে।
---বলো।
---আমার বিয়ে ঠিক করছে পরিবার থেকে।
---কি, মজা করছ। (অনেক টা সিরিয়াস ভাব
নিলাম)
---মজা নয়, সত্যি এই দেখ আংটিও পড়িয়ে
গিয়েছে। (হাতের আংটি দেখিয়ে) এ তো
আমার পছন্দ করা আংটি।
----অনেক খন চুপ থেকে, বিয়ে করে নাও, আর
আমাক দাওয়াত দিয়ো, অনেক দিন পরে বিয়ে
খাব।
---কী বললে, আমার বিয়ে খাবা???? (মলিন
মুখে)
----হ্যা, কলিগের বিয়ে খাবনা, যদি দাওয়াত
না দিতে চাও তবে দিওনা। (অভীমানী সুরে)
---তুমি কী সত্যি কিছু বলবেনা?????
---আমি কী বলব, জিবন তোমার সিদ্ধান্ত
তোমার।
----তুমিকী আমাকে ভালবাসনা?????
----বাসতাম।
----বাসতাম মানে?????
----কোন মানে নেই, এখন আসতে পার অনেক
কাজ আছে।
----আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচনা, মরে যাব
আমি।
---মরবেনা ঠিক বেঁচে থাকবা, আর মৃত্য কোন
সমাধান নয়।
বেশ কিছুখন ওভাবেই তাকিয়ে রইল আমার
দিকে, চোখে পানি টল মল করছে, কোন রকমে
চোখের পানি আটকে চলে গেল।
অফিসের সবাইকেই গোপনে দায়াত দিয়ে
দিলাম, যাতে করে নিশি জানতে না পরে যে
ওর বিয়ের দিনেই আমারো বিয়ে। তবে একটা
জিনিস ও যার সাথে বিয়ে তাঁর নামটাও
জানেনা দেখছি।
থাক পরেই না হয় জানবে।
দেখতে দেখতে বিয়ের দিন ঘনিয়ে এলো।
নিশি অফিসে এসে ক্যামন যেন মুখ গোমড়া
করে বসে থাকে, অফিসের সবাইকে দাওয়াত
দিয়ে এক পর্যায়ে আমাকেও দাওয়াত দিল।
---যাক অবশেষে দাওয়াতটা দিলে,
ভাবছিলাম দিবে না।
---হু দিলাম, তবে আপনি আসবেন না দয়া করে।
---আমি না আসলে তো তোমার বিয়েই হবে না।
---মানে????
---বিয়ের কার্ড থেকে বরের নামটা দেখিয়ে,
দেখ আমি না আসলেও আমার নামের কেও
একজন তো আসবেই, বলে হাসতে লাগলাম।
রাগ করে চলে গেলো পাগলিটা।
অবশেষে আজ আমাদের বিয়ে। কিন্তু দুখের
বিষয় অফিসে সবাই আমার পক্ষ থেকে
বিয়েতে যাবে। নিশির পক্ষে শুধু নিড়াকে
পাঠানো হয়েছে।
হয়ত ও সবাইকে দেখে ভাববে ওর বিয়ে
খাইতেই আসছে।
বর যাত্রী সহ নিশিদের বাড়ি পৌছালাম,
কাজী বিয়ের কাজ শুরু করলেন, যথা সময়
বিবাহ সম্পুর্ন হল,
আমি ""জীবিত"" দের লিষ্ট হতে নিজের নাম
পত্যাহার করে বিবাহিতদের লিষ্টে
অন্তর্ভুক্ত করলাম।
বিদায় আদায় নিয়ে বউ সাথে করে বাড়ি
ফিরলাম, বাড়ি আসতেই নানা রকম
আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতেই সন্ধা। একটু ফ্রেশ
হয়ে বন্ধুরা মিলে আড্ডা দিলাম।
১১টার দিকে এক ভাবির আগমন, এইযে নতুন
জামাই বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিলে হবে।
ওদিকে যে নতুন বউ বাসর ঘরে অপেক্ষা করছে।
কি আর করা ওদের বিদায় দিয়ে রুমে এলাম।
আসার আগে ভাবির সেই রকমের কিছু বানী,
সব কথার এক কথা দেবরজী বিলাই মারা চাই
চাই।
অন্য দিকে নিশি যখন যানতে পারবে আমার
সাথেই ওর বিয়ে হয়েছে, আর সব আমার
পরিকল্পনা তখন এই ঘরে আমার যাইগা হবে কী
না, তাই ভাবছি।
দরজা ঠেলে ভতরে গেলাম, দরজা আটকে
এগোতেই নিশি এসে সালাম করল। এর পর এক
গ্লাস দুধ এনে আমার হাতে দিল।
এখন পর্যন্ত কোন কথাই বলি নি, আর নিশিও
আমাকে দ্যাখেনি।
দুধ অর্ধেক খেয়ে বাকিটা নিশির দিকে
বাড়িয়ে দিলাম, এই নাও এটুকু তুমি খাও।
এবার নিশি নড়ে উঠল, ঘোমটা তুলে আমার
দিকে তাকাল। আমাকে দেখেই তেলে
বেগুনে।
---আপনি এখানে????
--+আমার ঘরে আমি ছারা কে থাকবে????
বলছিলাম না আমি না আসলে তোমার বিয়েই
হবে না। সব আমার পরিকল্পনা।
---আমার কাছে যদি আসার চেষ্টা করেন তবে
খবর আছে।
---রাত বাজে ১১.৩০ এখন টিভিতে খবর দেখতে
পারব না। আর বাংলাদেশের খবর আমি দেখি
না।
---কিসের খবর সময় হলেই দেখতে পাবা। বলেই
চেঞ্চ করতে চলে গেলো, চেঞ্জ এসে ধপাস
করে শুয়ে পরল। আমিও চেঞ্জকরে এসে শুয়ে
পরলাম, ওকে রাগাতে মাঝে কোল বালিস
দিয়ে দিলাম।
---মাঝে কোল বালিস তো, মনে থাকে যেন।
---থাকবে থাকবে।
কখন ঘুমিয়ে পরেছি জানিনা সকালে ঘুম
ভাংতেই বুকের উপর ভারি কিছুর অস্তিত্ব
অনুভব করলাম। চোখ খুলে দেখি নিশি শুয়ে
আছে বুকের উপর মাথাদিয়ে।
কিছু চুল এসে পরেছে ওর মুখের উপর, সকালের
হালকা আলোটা নিশির মুখের উপর পরায়
মুখটার মায়া যেন হাজার গুন বাড়িয়ে দিচ্ছে,
আর মুখের উপরে ঝুলে পরা চুলগুলে মুখের উপর
আলো ছায়ার খেলা তৈরি করছে।
বাইরে থেকে নিঝুম পেত্নীটা দরজা
ধাক্কাচ্ছে আবার, তার শব্দেই নিশির ঘুমটাও
ভেঙে গেলো।
সাথে সাথে
---কী মহারানীর খবর কই??? আর আমার বুকের
উপর মাথা দিয়ে ঘুমানো ক্যান???? হুম....
----আমার যেখানে উচ্ছা মাথা দিয়ে ঘুমাব
তাতে তোমার কি হুম.... (যাক রাগটা পড়ছে, আর
তুমি ডাকা শুরু হয়ছে)
---বাহরে আমার বুকের উপর ঘুমাবে আর
আমাকেই উলটো ঝাড়ি।
---ঝাড়ির দেখছ কী, এইতো শুরু।
---আমিও শেষটা জানি কিন্তু....
---ঐ তোমাদের ঝগড়া থামাবা সকাল সকাল,
না লোক জড় করবা।(নিঝুম)
উঠে বাইরে এলাম,
---কিরে ভাইয়া ঝগরা শেষ হল।
---হুম, হল।
ফ্রেশ হয়ে নাশতা করলাম, দুপুরে নিশিদের
বাড়ি থেকে আমাদের নিতে আসল, তাদের
সাথে নিশি পরিচয় করিয়ে দিল, আদর
আপ্রায়ন শেষে তাঁদের সাথে নিশিদের বাড়ি
এলাম, রাতের খাবার খেয়ে নিশির রুমে এলাম
ঘুমাব এখন।
কিন্তু নিশি শুরু করল বাসর রাতের মতই।
আমি শুনছি আর মিটি মিটি হাসছি, এইতো
কেবল শুরু এই খুনশুটি যে চলতেই থাকবে, তবে
আশা একটাই যে আমার উপর দিয়ে জিতে
যেতে পারবে না নিশি।
পারলে বাসর রাতে আমাকে বাইরেই থাকতে
হত, বা কঠোর কোন শাস্তি পেতে হত। যার
কিছুই হয়নি।
আমিও সৃষ্টি কর্তার কাছে এটুকই চাই এই
পাগলিটার সাথে খুনশুটি করেই যেন জিবন টা
পার করে দিতে পারি..
.

Comments

Popular posts from this blog

অবুঝ ভালোবাসার গল্প

----ঠিক এই মুহুর্তে আমাকে এক দল মেয়ে গুন্ডা ঘেরোয়া করে রেখেছে, কি অপরাধ করেছি বা কার পাকা ধানে মই দিয়েছি কিছুই জানিনা।।। কোচিং করে বের হয়ে ফাকা মাঠে বসে গল্পের বই পড়ছি।। ঠিক সেই সময় সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে মেয়েরা হাজির।। আমি ভয়ে ভয়ে বললাম,, __কি বেপার।।। আমাকে ঘেরাও করে কি খুন করার প্লান করা হচ্ছে নাকি?? মেয়েদের সবাই একসাথে বলল,, __ঠিক তা নয়।। তবে আমাদের কথা না শুনলে হয়ত খুন করতেও পারি।। কি সাংঘাতিক বেপার!! এরা খুন করার কথা কত্ত সহজে বলছে।। মনে হচ্ছে খুন করা ওদের কাছে ডালভাত।। যাই হোক আমি বললাম,, __আমাকে কেন এভাবে ঘেরাও করা হয়েছে বলা যাবে কি?? __অবশ্যই বলা যাবে।। আগে আপনি বলুন তো আপনি নিজেকে কি ভাবেন?? সালমান খান?? __খান নয়।। তবে আমার নাম সালমান সাদিক মনে করি।। __সে যেই হোন না কেন। আপনি আমাদের বান্ধবী তিথিকে এভাবে ঘোরাচ্ছেন কেন?? __কিভাবে ঘোরালাম?? __ও তো আপনাকে অনেক পছন্দ করে।। আপনি ওকে পাত্তা দিচ্ছেন না কেন?? __তাহলে এই বেপার।। আপনারা এখন আমার কাছে কি আশা করছেন?? আপনাদের বান্ধবীর কাছে গিয়ে মাফ চেয়ে আসবো?? __জি হ্যা।। আর তাকে তার অধিকার ফিরিয়ে দিন।। __...

কাল ছেলের ভালবাসা............

------- ---এই তুমি ওই মেয়েটার দিকে তাকাচ্ছ কেন???? ---কই কোন মেয়ে, আমি তো কোন মেয়ের দিকে তাকায় নি। ---আমি দেখছি, তুমি তাকাইছো। তুমি আমাকে আর ভালবাস না। ---আরে এখানে ভাল না বাসার কী হল??? ---আমি জানি এখন আর আমাকে ভাল লাগেনা, পুরাতন হয়ে গেছি না। ---মানুষ কী কখন পুরাতন হয় পাগলি???? ---ও এখন মানুষ হয়ে গেলাম আমি। ---আরে কী বলি আর তুমি কী বুজছ??? ---আর বেঝাতে হবে না, আমি বুঝে গেছি। থাক তুমি আমি গেলাম। বলে অভিমানে গাল ফুলিয়ে চলে গেল ইভা। পাগলিটা কী করে না, ছোট খাটো বিষয় নিয়ে একটুতে রেগে যায়। অনেক চেষ্টা করলাম ওকে আটকাতে, কোন লাভ হল না। ওর চলে যাওয়া পথের দিকে অপলক তাকিয়ে রয়েছি। মেয়েটা বড্ড অভিমানি। একটু বেশিই বৈকী...... ও হ্যা, আমি নাঈম, আর যে চলে গেল সে ইভা। আমরা দেশের সনাম ধন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র-ছাত্রী । ও যে আমাকে কি দেখে ভালবাসছিল, একমাত্র ও নিজেই জানে। আমি দেখতে শুনতে খুব একটা ভাল নয়, কালো একটা ছেলে, পারিবারিক অবস্থাও খুব একটা ভাল না। কিন্তু এই মেয়েটি আমাকে প্রথম এসে প্রপজ করে। প্রথমে ওকে ফিরিয়ে দিলেও পরে শুরু হয় ওর পাগলামি। এক সময় ওর...